Pages

Friday, August 7, 2020

আসুন সবাই সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাড়াঁই...

                                                  

                    আসুন সবাই সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাড়াঁই...

সমাজের অবহেলিত এক স্তর। অবহেলা, লাঞ্চনা যাদের নামের সাথে ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে তারাই পথশিশু। শৈশবকালে যেখানে আদর-স্নেহ পেয়ে বড় হওয়ার কথা ওদের সেখানে ওরা অবহেলা লাঞ্চনা দুঃখ কষ্ট যন্ত্রণা নিয়ে বড় হয়....আসুন আমরা সবাই ওদের পাশে এগিয়ে আছি....

Wednesday, August 5, 2020

সামাজিক সংগঠন কেন দরকার?



মানুষ সামাজিক জীব। সামাজিক জীব হিসেবেই সে বেড়ে ওঠে, বসবাস করে। প্রাণীজগতের আরো কিছু প্রাণীর মধ্যেও সমাজবদ্ধ হয়ে জীবনযাপনের প্রবণতা দেখা যায় তবে মানুষের বুদ্ধির মাত্রা তাদের চেয়ে বেশি। মানুষ কেবল সামাজিক প্রাণীই নয়, বিচার-বুদ্ধিসম্পন্ন প্রাণীও বটে। তাই সে সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাসের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকার সংগঠন গড়ে তোলে যার মধ্যে সামাজিক সংগঠন অন্যতম। সাধারণত কোনো নির্দিষ্ট সমাজকে কেন্দ্র করেই সামাজিক সংগঠনগুলো গড়ে ওঠে। কোনো সমাজের কিছু লোক যখন কিছু নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বা সমাজের কিছু সমস্যা সমাধানে একত্র হয় এবং কিছু নীতিমালা অনুসরণ করে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যায় তখন তাকে সামাজিক সংগঠন বলা যায়। সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠায় সমাজের যুবক শ্রেণিকে অগ্রণী ভূমিকায় দেখা যায়। সামাজিক সংগঠন করার প্রধান কারণ সামাজিক দায়বদ্ধতা। জন্মের পর শিশুর মানসিক বিকাশে সমাজের ভূমিকা অনন্য। সমাজের কোনো এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই তার প্রথম পাঠ শুরু হয়। তরুণ বয়সে সমাজের সমবয়সী বন্ধুদের সঙ্গে চলাফেরায় তার সামাজিকীকরণ সম্পন্ন হয়, নেতৃত্বের গুণাবলি গড়ে ওঠে। এভাবে সামাজিক মূল্যবোধ নিয়ে ধীরে ধীরে সে উচ্চশিক্ষার দিকে এগিয়ে যায় এবং সামাজিক কাজ করার দায়বদ্ধতা অনুভব করে। একসময় সে সামাজিক সংগঠন গড়ে তোলে। সামাজিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজ করে থাকে। যেমন: রাস্তাঘাট সংস্কার, বাঁধ বা সাঁকো নির্মাণ, বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা, রক্ত দান ইত্যাদি। এছাড়াও সমাজের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে শীতবস্ত্র ও ঈদসামগ্রী বিতরণ, চাঁদা তুলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া, স্বল্পব্যয়ে মেডিক্যাল সেবার আয়োজন করা ইত্যাদির মাধ্যমেও সামাজিক সংগঠনগুলো সমাজসেবা করে থাকে।

সামাজিক ব্যাধি নির্মূলেও সামাজিক সংগঠনগুলো এগিয়ে আসে। ভৌগোলিক এবং আর্থ-সামাজিক কারণে সমাজে বিভিন্ন সামাজিক ব্যাধি রয়েছে। মদ, জুয়া, মাদকদ্রব্য, যৌতুক, নারী নির্যাতন, দুর্নীতি, সুদ, ঘুষ, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ইত্যাদির বিরুদ্ধে সামাজিক সংগঠনগুলো অবস্থান নিতে পারে। মানববন্ধন, আলোচনা সভা, সেমিনার, লিফলেট বিতরণ ইত্যাদির মাধ্যমে সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে পারে।

সামাজিক সংগঠনগুলো হতে পারে সুস্থ বিনোদনের আধার। একসময় ছেলেরা মাঠে ঘুড়ি উড়াতো, লাটিম ঘুরাতো, কাবাডি খেলতো; মেয়েরা বাড়ির উঠোনে ছক কেটে এক্কাদোক্কা, বৌছি ইত্যাদি বিভিন্ন গ্রামীণ খেলা খেলতো। বর্তমানে বিনোদন সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে ভিডিও গেইম, অনলাইন, এবং কিছু বিনোদন কেন্দ্রে যা বিনোদনের চাহিদা পূরণে অপ্রতুল এবং কিছু ক্ষেত্রে মানসিক বিকাশে প্রতিবন্ধক। সংগঠনগুলো নিয়মিত খেলাধুলা, টুর্ণামেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে এই চাহিদা পূরণের পাশাপাশি সুস্থ মানসিক বিকাশে সহায়তা করতে পারে।

সমাজ উন্নয়নে বিশেষত শিক্ষায় সামাজিক সংগঠনগুলো অবদান রাখতে পারে। বাংলাদেশে এখনো এমন কিছু এলাকা রয়েছে যেগুলোর শিক্ষার হার তুলনামূলক কম। কিন্তু দেশের ভারসাম্যমূলক উন্নয়নে প্রতিটি এলাকা সমানতালে এগিয়ে যাওয়ার বিকল্প নেই। শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ, শিক্ষাবৃত্তি প্রদান ইত্যাদির মাধ্যমে সামাজিক সংগঠনগুলো শিক্ষার মান উন্নয়নে সহায়তা করতে পাারে। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষামূলক প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার আগ্রহ বৃদ্ধি করা যেতে পারে। পরস্পর সহযোগিতামূলক রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরিতে সামাজিক সংগঠনগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নেই। পরমতসহিষ্ণুতার অভাব। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থকরা একই সামাজিক সংগঠনে দীর্ঘদিন কাজ করার ফলে তাদের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য গড়ে ওঠে, সমাজকে এগিয়ে নেওয়ার মানসিকতা তৈরি হয়। অদূর ভবিষ্যতে এই যুবসমাজ একটি সুন্দর রাজনৈতিক পরিবেশ উপহার দিতে পারে। বেকারত্ব বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য একটি সমস্যা। বেকারত্ব দূরীকরণে সামাজিক সংগঠনগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। মাসিক চাঁদা তুলে মূলধন  সংগ্রহের পর সংগঠন বিভিন্ন কর্মসংস্থান গড়ে তুলতে পারে। সমাজের সম্পদশালীরাও এতে অংশীদার হতে  পারে। গবাদিপশু পালন, মত্স্য চাষ, নার্সারি তৈরিসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে ব্যক্তির অসচ্ছলতা দূর হওয়ার পাশাপাশি দেশে বেকারত্বের হারও কমে আসবে।

এভাবে সামাজিক সংগঠন থেকে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র বিভিন্নভাবে উপকৃত হতে পারে। কেউ যদি তার নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, সমাজের জন্য কিছু করতে চায় তবে সে সামাজিক সংগঠন করতে পারে। সামাজিক সংগঠন হোক সমাজের সমন্বয়ক।

         লেখক 
                   এ এস এম ফিরোজ খান

আসুন সবাই সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাড়াঁই...

                                                                        আসুন সবাই সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাড়াঁই... সমাজের অবহেলিত এক স্ত...